যুক্তরাষ্ট্র কি গ্রিনল্যান্ড দখল করতে পারবে? চুক্তি কিংবা কূটনৈতিক বিরোধ থেকে যুদ্ধ – চলুন সম্ভাব্য পথগুলো দেখা যাক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ডের প্রতি নবায়িত আগ্রহ সবার মনে প্রশ্ন তুলেছে – এটি কি আসলেই সম্ভব?
যদিও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব নেই, তবে গ্রিনল্যান্ড কিনতে হলে বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে বলে মনে করেন রুশ ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইলিয়া ক্রাভচেঙ্কো।
তিনি আরো প্রশ্ন তোলেন, “
নতুন প্রশাসন কি এই ধরনের বড় খরচ দিয়ে যাত্রা শুরু করতে চায়?”
সামরিক বিশ্লেষক অ্যালেক্সেই লিওনকভ বলেন,
ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ডেনমার্ক হয়তো অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন অনুভব করতে পারে।
১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড কেনার জন্য ১০ কোটি ডলার প্রস্তাব করেছিল, যা ডেনমার্ক প্রত্যাখ্যান করে। নতুন আগ্রহের মধ্যে, গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেদে স্পষ্ট বলেছেন, “আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনোই হব না।”
★ তবে আর কি কি উপায় থাকতে পারে?
১️. লিজ
লিওনকভ ধারণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আপোষ হিসেবে ৯৯ বছরের জন্য গ্রিনল্যান্ডকে লিজ নিতে পারে।
২️. সরাসরি চাপ
• ন্যাটোর প্রভাব ব্যবহার করে:
রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ড. ভ্লাদিমির ভাসিলিয়েভ মনে করেন,
যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিতে পারে অথবা ন্যাটো দেশগুলোর ওপর ব্যয় বৃদ্ধির চাপ প্রয়োগ করতে পারে। এতে করে ডেনমার্ক এবং ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হতে পারে।
• অর্থনৈতিক যুদ্ধ:
ট্রাম্প ডেনমার্ক এবং এর সমর্থকদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন, যা অর্থনৈতিক সংকটে রূপ নিতে পারে, মন্তব্য করেন রুশ গবেষক ভাসিলিয়েভ।
৩️. সামরিক পদক্ষেপ
ন্যাটো সদস্য ডেনমার্কের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে নয় বলে মন্তব্য করেন ক্রাভচেঙ্কো। তবে কূটনৈতিক বিরোধের মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করেন লিওনকভ।
৪️. গণভোট
গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫০,০০০। প্রত্যেককে ১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দিলে সহজেই তাদের সমর্থন পাওয়া যেতে পারে, রসিকতা করে বলেন ভাসিলিয়েভ।
২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা যায়, গ্রিনল্যান্ডের ৭০% মানুষ পূর্ণ স্বাধীনতা চায়।
বিশ্লেষণ:
লিওনকভ বলেন,
আমার মনে হয় ব্যাপক আলোচনা হবে, তবে গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঞ্চল বা রাজ্য হিসেবে যুক্ত হবে,”
তিনি আরও যোগ করেন,
“ডেনমার্ক রুশ ট্যাঙ্কারদের বাল্টিক সাগরের পথে বাধা দেওয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ পাবে এবং এর জন্য তারা ক্ষতিপূরণও পাবে।
এদিকে ভাসিলিয়েভ মনে করেন,
যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কৌশল নিয়ে ইতিমধ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।