সিরিয়ার গোয়েন্দা বিভাগে নতুন নেতৃত্ব এসেছেন আনাস খাত্তাব। মাত্র ৩৭ বছর বয়সী এই নেতা ইতিমধ্যেই তার গোপন কার্যক্রম ও চ্যালেঞ্জিং পদক্ষেপের জন্য পরিচিত। চলুন জেনে নিই তার জীবনকাহিনি এবং কীভাবে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হলেন।
১৯৮৭ সালে সিরিয়ার পূর্ব কালামুনে জন্মগ্রহণ করেন আনাস খাত্তাব। তিনি প্রথমে দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরে ইদলিব বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শেষ করেন।
দুটি বিদেশি ভাষায় পারদর্শী আনাস খাত্তাবের জীবনে বড় পরিবর্তন আসে ২০০৮ সালে। ওই সময় তিনি সিরিয়া ছেড়ে ইরাকে যান। উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকান দখলের বিরুদ্ধে লড়াই করা। ইরাকের এই যাত্রা তাকে আরও গভীরভাবে জিহাদি গ্রুপগুলোর সাথে সংযুক্ত করে।
২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আনাস খাত্তাব জিহাদি গ্রুপগুলোর সাথে শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করেন। ২০১২ সালে তিনি জাবহাত আল-নুসরার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। এর পর থেকেই তার উত্থান শুরু হয়।
আনাস খাত্তাব HTS-এ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তিনি ছিলেন আল-নুসরা ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ প্রশাসক এবং HTS প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির ডেপুটি। ইদলিবে HTS-এর গোয়েন্দা ও সাধারণ নিরাপত্তা বিভাগ প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন। HTS-এর গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা তিনি নিজেই প্রতিষ্ঠা করেন।
ইদলিবে আইএস এবং অন্যান্য চরমপন্থী সংগঠন নির্মূলে আনাস খাত্তাবের ভূমিকা ছিল অনন্য। তিনি নিরাপত্তা অভিযানের মাধ্যমে জিহাদি গ্রুপগুলোর মধ্যে অনুপ্রবেশ করেন এবং অনেক চরমপন্থী নেতাকে নির্মূল করেন।
আনাস খাত্তাব সবসময় গোপনীয়ভাবে কাজ করার জন্য পরিচিত। আজ পর্যন্ত তার কোনো ছবি প্রকাশিত হয়নি। আল-কায়েদা তাকে আমেরিকান ড্রোনের মাধ্যমে জিহাদি নেতাদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য দায়ী করেছে।
আনাস খাত্তাবের পুরো জীবনের গল্প যেন এক রোমাঞ্চকর উপন্যাসের মতো। সিরিয়ার গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে তার ভবিষ্যৎ কার্যক্রম কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল। তার নেতৃত্ব সিরিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।