সিরিয়া নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির আগ্রহের পেছনে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক কারণ রয়েছে। সিরিয়া মধ্যপ্রাচ্যের একটি কৌশলগত অঞ্চল হওয়ায় সেখানে প্রভাব বিস্তার আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্রান্স এবং জার্মানির আগ্রহের কারণ

১. আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা:
সিরিয়ার যুদ্ধ ও সংকট ইউরোপে শরণার্থী সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ইউরোপের দেশগুলো, বিশেষত জার্মানি, বিপুল সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হলে শরণার্থী সমস্যার সমাধান হতে পারে।

২. রাশিয়ার প্রভাব কমানো:
সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব কমিয়েছে। বিশেষত, জার্মানি রাশিয়ার শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাশিয়ার প্রভাব হ্রাস করার লক্ষ্য ফ্রান্স ও জার্মানির আগ্রহকে বাড়িয়েছে।

৩. অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রভাব:
সিরিয়ার জনগণের সহায়তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের মানবিক ভূমিকা প্রতিষ্ঠা করতে চায় ফ্রান্স ও জার্মানি।

এজন্য তারা নতুন ভাবে অসংখ্য এনজিও প্রতিষ্ঠা করে সিরিয়ার নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ নেবার চেষ্টা করবে। এর বাইরেও সিরিয়ার পুনর্গঠনে এসব পশ্চিমা দেশ নিজেদের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মাধ্যমে বড় ধরণের অর্থ সংগ্রহের সুযোগ দেখতে পাচ্ছে।

উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, সিরিয়াতে এসে কোন সরকারী বৈঠকের আগেই সিরিয়ায় অবস্থিত খ্রিস্টানদের সাথে বৈঠক করেছে ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

এর আগে সিরিয়া নিয়ে তাদের মনোভাব কেমন ছিলো?

সিরিয়ার আসাদ সরকারের বিরোধিতা:
ফ্রান্স বরাবরই বাশার আল-আসাদের সরকারের কড়া সমালোচক। গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ফ্রান্স আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

শরণার্থী গ্রহণ:
জার্মানি যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য উদার নীতি গ্রহণ করেছিল। ২০১৫-১৬ সালে জার্মানি প্রায় ১০ লক্ষ শরণার্থী গ্রহণ করে। তবে এই শরণার্থীদের পুনর্বাসন ও একীকরণ জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।

সামরিক হস্তক্ষেপ:
ফ্রান্স সিরিয়ায় আইএস বিরোধী অভিযানে সরাসরি যুক্ত ছিল। জার্মানি সামরিক ভূমিকা এড়িয়ে গেলেও আইএসের বিরুদ্ধে পশ্চিমা জোটকে কূটনৈতিক এবং আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

বৈশ্বিক পরাশক্তিদের শক্তি পরীক্ষার ক্ষেত্র বানিয়ে রেখে সিরিয়াকে ধ্বংস করার পেছনে এদের কারো ভূমিকাই কারোর চেয়ে কম না। (hn/6)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *